করোনাভাইরাসের (কোভিড–১৯) মহামারি মোকাবিলায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জরুরি ভিত্তিতে অনুমোদন দিতে তিনটি টিকার কথা বিবেচনা করছে। এই টিকাগুলো হলো যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ফাইজার ও মডার্না এবং যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রাজেনেকার যৌথভাবে উদ্ভাবিত টিকা। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
বাংলাদেশসহ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোয় দ্রুত টিকা পৌঁছানোর এবং সমহারে বণ্টনের তাগিদও দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
এদিকে ফাইজারের টিকা যুক্তরাষ্ট্রে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে মার্কিন খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ)। ফাইজারের টিকাটি উদ্ভাবনে সহযোগিতা করেছে জার্মানির জৈব প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান বায়োএনটেক।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সৌম্য স্বামীনাথান গত শুক্রবার বলেন, তাঁরা প্রথমে ফাইজারের টিকার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করবেন। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এ ব্যাপারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সিদ্ধান্ত জানা যাবে। এরপর সংস্থাটি মডার্না ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোনো টিকার অনুমোদন দিলে, তা হবে করোনা মহামারি মোকাবিলায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি। কারণ, সে ক্ষেত্রে যেসব দেশের নিয়ন্ত্রক সংস্থা অনুমোদনের জন্য টিকার নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা মূল্যায়ন করে উঠতে পারেনি, সেসব দেশেও টিকা সরবরাহে বাধা থাকবে না। সৌম্য স্বামীনাথান বলেন, অন্তত ১০টি প্রতিষ্ঠান তাদের টিকা জরুরি ভিত্তিতে অনুমোদন দিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছে অনুরোধ জানিয়েছে।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস বলেছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কোভ্যাক্স কর্মসূচির আওতায় দরিদ্র ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোয় সরবরাহের জন্য প্রায় ১০০ কোটি ডোজ টিকা সংগ্রহের বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে গেছে। ১৮৯টি সদস্যরাষ্ট্রের অংশগ্রহণে সমহারে করোনার টিকা বণ্টন নিশ্চিত করতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোভ্যাক্স কর্মসূচি চালু করেছে। এ সময় তিনি সতর্ক করে বলেন, গত ছয় সপ্তাহে বিশ্বজুড়ে করোনায় মৃত্যু ৬০ শতাংশ বেড়েছে। কাজেই সংক্রমণের লাগাম টেনে ধরতে পরীক্ষা এবং রোগী ও সন্দেহভাজন রোগীদের আলাদা করার কার্যক্রম জোরদার, সামাজিক দূরত্বের নিয়মকানুন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাসহ বিকল্প ব্যবস্থাগুলো অনুসরণ করতে হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মকর্তারা বলছেন, টিকা সংগ্রহের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া বড় একটি অগ্রগতি। তবে বিশ্বজুড়ে টিকাগুলো বণ্টন করতে যথেষ্ট সময় লাগতে পারে। সংস্থাটির প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সৌম্য স্বামীনাথান বলেন, ২০২১ সালের প্রথম ছয় মাসে টিকার সরবরাহ সীমিত থাকতে পারে।